শেষ ১০ ওভারের বোলিংয়ে এভারেস্টের বদলে আল্পসের সামনে বাংলাদেশ
বাংলার জমিন ডেস্ক :
আপলোড সময় :
১০-১০-২০২৩ ০৫:০৮:৩১ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
১০-১০-২০২৩ ০৫:০৮:৩১ অপরাহ্ন
ফাইল ছবি :
৪০ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের রান ছিল ২৯৮। ক্রিজে তখনো শেকড় গেঁড়ে বসে ছিলেন জো রুট, অন্যপ্রান্তে নেমেই ঝড়ের ইঙ্গিত দেয়া জস বাটলার। হাতে তখনো ৮ উইকেট। ৪০০ রানকে তখন ইংল্যান্ডের হাতের নাগালেই মনে হচ্ছিল।
কিন্তু ধর্মশালায় আজ শেষ দশ ওভারে দারুণ বোলিংয়ে ইংল্যান্ডকে শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ৩৬৪ রানে আটকে রাখতে পেরেছে বাংলাদেশ। পাহাড়ের কোলের স্টেডিয়ামে এটাও রানপাহাড়ই, তবে ৪০০ রানের 'এভারেস্টে'র জায়গায় এখন 'আলপস' ডিঙানোর চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের সামনে, এই আর কী!
অনেকটা এভাবে দেখা যায়, কেওকারাডং পেরোনোর অভিজ্ঞতা নিয়ে আলপস পেরোনোর সামনে বাংলাদেশ। ওয়ানডতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ডই ৩২২ রানের, স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৫ বিশ্বকাপে।
আর হিসেব যদি হয় ধর্মশালার এই মাঠের, তবে রেকর্ড বলবে - এই মাঠে এর আগে সর্বোচ্চ স্কোরই ছিল ৩৬৬, ২০১৪ সালে যা ভারত করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। পরে ব্যাটিং করা দলের সর্বোচ্চ স্কোর ২৭১, একই ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। আর পরে ব্যাটিং করে জেতা দলের সর্বোচ্চ স্কোর ২২৭/৩ - ইংল্যান্ড যা করেছিল ভারতের বিপক্ষে, ২০১৩ সালে।
ধর্মশালার পিচ ছোট, বল আজ ব্যাটে সহজেই আসছে - অন্তত প্রথম ইনিংসে এসেছে, মাঠের উচ্চতার কারণে বাতাসে বল ছোটে দ্রুত। এ সবই যা বাংলাদেশের রান তাড়ার কঠিন স্বপ্নে কিছুটা সাহস জোগাতে পারে।
ইংল্যান্ডের রানপাহাড়ে ওঠার কাজ তো সহজ হয়ে গেছে এসব কারণেই। বল সোজা ব্যাটে এসেছে, তাতে ম্যালান, রুটরা সহজে রান তুলেছেন। বেয়ারস্টো আজ ফিফটি পেলেও সেভাবে ঝড় তুলতে পারেননি, আউট হয়েছেন ৫৯ বলে ৫২ রান করে। তবে শুরু থেকে আজ 'বেয়ারস্টো' বনে গেছেন ম্যালান।
এ পিচে হার্ড হিটিংয়ের বদলে সোজা ব্যাটে ক্রিকেটীয় শটেই যে রান তুলতে হয়, সেটিই দেখিয়েছেন ম্যালান ও রুট দুজন। প্রথম ৪০ ওভারে বাংলাদেশের বোলিংয়ে কোনো পরিকল্পনাই কাজে আসেনি। সে সময়ে বাংলাদেশ বোলিংয়ে ভিন্ন কিছু চেষ্টা না করার দোষে দোষী বলে মনে হতে পারে, তবে ম্যালান-রুটের কারণে ভিন্ন কিছুর চেষ্টাও সেভাবে কাজে আসছিল না। সাকিব উইকেট তুলে নেয়ার চেষ্টায় ৩২ ওভারের মধ্যেই ১০ ওভার করে ফেলেছেন, তাতে ৫২ রান দিয়ে বেয়ারস্টোর উইকেটের বাইরে আর কিছু পাননি। তবে প্রথম ৪০ ওভারে বাংলাদেশের 'সেরা' বোলার তিনিই!
ওই ৪০ ওভারের মধ্যে ম্যালান তাঁর প্রথম বিশ্বকাপ ফিফটিকে প্রথম বিশ্বকাপ সেঞ্চুরিতে নিয়ে গেছেন, রুটও এই বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নিয়েছেন। ৩৮তম ওভারে ম্যালান (১৪০) আউট হওয়ার পরই যা বাংলাদেশ লড়াইয়ে ফেরে। তবু তখনো রুট আর বাটলার ছিলেন বলে ইংল্যান্ডের ৪০০-র সম্ভাবনা ভালোভাবেই ছিল।
৪০তম ওভারে বাটলারকে (২০) বোল্ড করে সে সম্ভাবনায় প্রথম ধাক্কা দেন শরীফুল। তাঁরই পরের ওভার - অর্থাৎ ৪২তম ওভারে জোড়া ধাক্কা। ইংল্যান্ড ইনিংসকে ৪০০ থেকে ৩৬৪-তে নামিয়ে আনার প্রধান কারণও সেটিই। ওভারের পঞ্চম বলে রুটকে (৮২) ফেরালেন শরীফুল, তার পরের বলে লিভিংস্টোনকে!
দুই ক্লাসিক ব্যাটসম্যান ম্যালান আর রুট যাওয়ার পরই বাংলাদেশের স্লোয়ার, কাটার, স্লোয়ার বাউন্সারের পরিকল্পনাগুলো কাজে এসেছে। এরপর ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের বাকি সবাই-ই হাই লিফটে জোরে মারার ব্যাটসম্যান, তখন বাংলাদেশ বোলিংয়ে লাইন-লেংথ-গতি বদলের চেষ্টাও করতে পেরেছে, তাতে সাফল্যও এসেছে।
ওয়ানডতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ডই ৩২২ রানের
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Jamin
কমেন্ট বক্স